বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী শিশু বলতে আঠারো বছরের কম বয়সী ব্যক্তিকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। সংবিধান শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং তাদের যথাযথ যত্ন, সুরক্ষা এবং বিকাশ নিশ্চিত করার গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেয়।

বাংলাদেশ একটি উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যার শিশুদের দেশ। সর্বশেষ আদমশুমারি অনুসারে, আঠারো বছরের কম বয়সী শিশুরা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫%। তাই তাদের অধিকার সুরক্ষিত এবং তারা প্রয়োজনীয় যত্ন ও সমর্থন পায় তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশের সংবিধান শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং তাদের যথাযথ যত্ন, সুরক্ষা এবং বিকাশ নিশ্চিত করার গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেয়। সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, “রাষ্ট্র শিশুদের সুরক্ষা ও কল্যাণের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং প্রতিটি শিশুর মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে পূর্ণ অংশগ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করবে। শিশু অধিকারের কনভেনশন।”
সংবিধান শিশুদের জন্য শিক্ষার গুরুত্বকে আরও স্বীকৃতি দেয়। সংবিধানের 17(1) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে “ছয় থেকে দশ বছর বয়সী সকল শিশুর জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক এবং বিনামূল্যে হবে।” এই বিধানটি নিশ্চিত করে যে বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু তাদের আর্থ-সামাজিক পটভূমি নির্বিশেষে মৌলিক শিক্ষার অ্যাক্সেস পাবে।
সংবিধান শিশুদের শোষণ ও অপব্যবহার থেকে রক্ষা করার গুরুত্বও স্বীকার করে। সংবিধানের 34 অনুচ্ছেদ জোরপূর্বক শ্রম নিষিদ্ধ করে এবং 35 অনুচ্ছেদ চৌদ্দ বছরের কম বয়সী শিশুদের যে কোনও বিপজ্জনক কাজে নিযুক্ত করা নিষিদ্ধ করে। যারা এই বিধান লঙ্ঘন করে তাদের শাস্তির বিধানও সংবিধানে রয়েছে।
সংবিধানের পাশাপাশি, বাংলাদেশ শিশুদের অধিকার রক্ষাকারী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি ও কনভেনশনও অনুমোদন করেছে। 1990 সালে বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত শিশু অধিকার সংক্রান্ত কনভেনশন শিশুদের মৌলিক অধিকার এবং এই অধিকারগুলি রক্ষার জন্য রাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতার রূপরেখা দেয়।
বাংলাদেশ সরকার শিশুদের সুরক্ষা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় শিশু কল্যাণ সম্পর্কিত নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য দায়ী। সরকার সমাজসেবা অধিদপ্তরও প্রতিষ্ঠা করেছে, যা দুর্বল শিশু এবং তাদের পরিবারকে সামাজিক কল্যাণ সেবা প্রদান করে।
উপরন্তু, বাংলাদেশ একটি জাতীয় শিশু সুরক্ষা হেল্পলাইন (1098) প্রতিষ্ঠা করেছে, যা নির্যাতন, অবহেলা বা শোষণের শিকার শিশুদের সহায়তা ও সহায়তা প্রদান করে। হেল্পলাইনটি শিশু যত্ন এবং সুরক্ষার বিষয়ে পিতামাতা এবং যত্নশীলদের নির্দেশিকা প্রদান করে।
উপসংহারে, বাংলাদেশের সংবিধান শিশুদের অধিকার রক্ষা এবং তাদের যথাযথ যত্ন, সুরক্ষা এবং বিকাশ নিশ্চিত করার গুরুত্বকে স্বীকৃতি দেয়। আঠারো বছরের কম বয়সী শিশুরা নাবালক হিসাবে বিবেচিত হয় এবং শোষণ ও নির্যাতন থেকে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী। বাংলাদেশ সরকার শিশুদের সুরক্ষা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে এবং দেশের প্রতিটি শিশু যাতে তাদের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় যত্ন, সমর্থন এবং সুরক্ষা পায় তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ চালিয়ে যাওয়া অপরিহার্য।