ইসলামী প্রার্থনা, যা সালাহ বা সালাত নামেও পরিচিত, এটি ইসলামী আধ্যাত্মিকতার একটি মৌলিক দিক এবং ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি বলে বিবেচিত হয়। প্রার্থনার উদ্দেশ্য হল মুমিন ও আল্লাহর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংযোগ গড়ে তোলা, ক্ষমা চাওয়া, নির্দেশনা চাওয়া এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।

Table of Contents
প্রার্থনা মনের নিরাময়ের একটি উত্সও হতে পারে, কারণ এটি মনকে শান্ত করার, বর্তমান মুহুর্তে ফোকাস করার এবং একটি উচ্চ শক্তির সাথে সংযোগ করার সুযোগ দেয়। এই সংযোগ শান্তি, স্বাচ্ছন্দ্য এবং উদ্দেশ্যের অনুভূতি আনতে পারে, যা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং স্ট্রেস দূর করতে সাহায্য করতে পারে।
মন ভালো করার দোয়া
فَاسْتَقِمْ كَمَا أُمِرْتَ وَمَنْ تَابَ مَعَكَ وَلَا تَطْغَوْا إِنَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ بَصِيرٌ
উচ্চারণ: ‘ফাসতাকিম কামা উমিরতা- ওয়ামান তাবা মাআকা, ওয়ালা তাতগাও ইন্নাহু বিমা তা’মালুনা বাসির। ’
অর্থ : সুতরাং (হে পয়গম্বর) তোমাকে যেভাবে আদেশ করা হয়েছে তাতে (সরল পথে) দৃঢ়ভাবে অবস্থান করো, তুমি এবং তোমার সঙ্গে যারা (আল্লাহর প্রতি) ঈমান এনেছো (সবাই, সঠিক পথ থেকে) সীমালংঘন করো না। তোমরা যা করো তিনি (আল্লাহ) তা ভালোভাবেই দেখেন।
প্রত্যেক ফজরের নামাজের শেষে ১১ বার এই দোয়াটি পাঠ করলে আপনার মনে শান্তি আসবে।
মন ভালো করার আরেকটি দোয়া
রাসুল (সা.) এ বিষয়ে আরেকটি উপকারী দোয়া শিখিয়েছেন- “اللهم مصرف القلوب صرف قلوبنا على طاعتك”
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা মুসররিফাল কুলুবি সররিফ ক্বুলুবানা আলা ত্ব-আতিক।’
অর্থ: ‘অন্তরগুলো পরিচালনাকারী হে আল্লাহ, আপনি আমাদের অন্তরকে আপনার আনুগত্যের ওপর স্থির রাখুন।’
ইসলামে নির্দিষ্ট প্রার্থনা রয়েছে যা শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা থেকে নিরাময় এবং ত্রাণের জন্য সুপারিশ করা হয়। এরকম একটি প্রার্থনা হল “রুকিয়াহ” বা কুরআনিক নিরাময়, যার মধ্যে রয়েছে কুরআনের আয়াত পাঠ করা এবং মন্দ আত্মা এবং নেতিবাচক প্রভাব থেকে সুরক্ষা চাওয়া। নবী মুহাম্মদ (সা.) শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা এবং আল-ফালাক এবং আন-নাসের মতো নির্দিষ্ট সূরা পাঠ করারও সুপারিশ করেছেন।
এই নির্দিষ্ট নামাজের পাশাপাশি, দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজও মনের উপর থেরাপিউটিক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রার্থনার গঠন এবং পুনরাবৃত্তি রুটিন এবং স্থিতিশীলতার অনুভূতি প্রদান করতে পারে, যখন রুকু এবং সেজদা করার কাজ শারীরিক উত্তেজনা থেকে মুক্তি দিতে পারে। আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ এবং আত্মসমর্পণের প্রতি মনোযোগও মানসিক চাপ কমাতে এবং শান্তির অনুভূতি বাড়াতে সাহায্য করতে পারে।
প্রার্থনাকে অন্যান্য স্ব-যত্ন অনুশীলনের সাথেও মিলিত করা যেতে পারে যেমন মননশীলতা, ধ্যান এবং ব্যায়াম এর নিরাময় প্রভাবগুলিকে উন্নত করতে। যারা মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য বিশ্বস্ত সম্প্রদায়, থেরাপিস্ট বা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাহায্য নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যাইহোক, প্রার্থনা মানসিক সুস্থতার দিকে যাত্রায় একটি মূল্যবান হাতিয়ার হতে পারে।
উপসংহারে, ইসলামিক প্রার্থনা আল্লাহর সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলা, শান্তি ও কৃতজ্ঞতা প্রচার করে এবং স্থিতিশীলতা ও রুটিনের অনুভূতি প্রদান করে মনের জন্য নিরাময়ের উৎস প্রদান করতে পারে। এটা মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে প্রার্থনাকে অন্য ধরনের স্ব-যত্ন এবং সহায়তার সাথে একত্রিত করা উচিত এবং যারা মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভুগছেন তাদের পেশাদার সাহায্য নেওয়া উচিত।