শীর্ষ নিউজ

মালয়েশিয়া শ্রমিক নিয়োগ 2022 আজকের খবর

প্রিয় মালয়েশিয়া প্রবাসী ভাই ও বন্ধুরা আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আশা করি আপনারা প্রত্যেকেই ভালো আছেন ও সুস্থ আছেন।

মালয়েশিয়া ভিজার খবর, মালয়েশিয়ায় যে নতুন প্রক্রিয়ায় কর্মী পাঠাতে হবে। গত ৯ই আগস্ট অফ হোয়াইট টি-শার্ট ও টুপি পরা পাঁচ তিনজন বাংলাদেশী রেমিটেন্স যোদ্ধা কুয়ালালামপুরে প্রবেশ করে আবারো একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করলেন। প্রায় চার বছরের বিরতির পর দেশটির শ্রম বাজার আবারো বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু করায় বিদেশী শ্রমিকদের প্রথম দল মালয়েশিয়ায় এসেছে। সম্প্রতি মালয়েশিয়া সব অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য পাঁচ বছরের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশিদের নির্মাণ, খনি, গার্হস্থ, পরিষেবা, উৎপাদন এবং প্লান্টেশনসহ বিভিন্ন শিল্পে চাকরির জন্য আবেদন করার অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছে।

মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত নতুন মজুরি বিধি অনুযায়ী তারা প্রতি মাসে কমপক্ষে ১৫০০ মালয়েশিয়ান রিংগিত প্রায় ৩৭০০০ টাকা বেতন পাবেন। তারা মালয়েশিয়ার আইন অনুসারে ওভারটাইম বেতন, বিনামূল্যে আবাসন স্বাস্থ্য বীমা এবং কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা বীমা সহ সব অতিরিক্ত সুবিধার জন্য যোগ্য হবে।

Advertisements

১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার শ্রমিক পাঠানো শুরু করে। সে সময় থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে ১০৬ মিলিয়ন দক্ষ ও অদক্ষ শ্রমিক পাঠিয়েছিল। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো অনুসারে আগামী চার মাসে 60 থেকে 80 হাজার অধিবাসী শ্রমিককে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া পাঠানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী তিন বছরে মালয়েশিয়ায় ৫ লাখের বেশি অতিরিক্ত বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে জানা যায় যার ফলে পরবর্তী পাঁচ বছরে মালয়েশিয়া থেকে ৪/৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

উল্লেখ্য বাংলাদেশিরা গত বছর মালয়েশিয়া থেকে ২০৯ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছে। করোনা প্রাদুরভাবের কারণে শ্রমিক সংকটের সময় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ব্যাপক আলোচনার পর মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মহামারী সর্বোচ্চ সময়ে এক মিলিয়নেরও বেশি লোকের শ্রম ঘাটতির কারণে মালয়েশিয়ার সব ধরনের ব্যবসায়ী বিশেষ করে পাম তেলের বাগান এবং সেমিকন্ডাক্টর নির্মাণ সহ সব প্রতিষ্ঠানেরই অর্ডার বাতিল করতে হয়েছিল এবং এতে রপ্তানিতেও ধ্বস নেমেছিল। আর তা মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিকভাবে পুনরুদ্ধার করার ক্ষমতাকে হুমকির মুখে ফেলে।

মালয়েশিয়া এমন একটি দেশ যা রপ্তানির উপর অনেক বেশি নির্ভর করে এবং বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই চেইনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। লাখ লাখ বিদেশি মালয়েশিয়ার বিভিন্ন কারখানা এবং পরিষেবা খাতে কাজ করে। তারপরও মালয়েশিয়া সব শিল্প এবং পরিষেবা খাতে বর্তমানে কমপক্ষে এক দুই মিলিয়ন শ্রমিকের অভাব রয়েছে এবং এ ঘাটতি প্রতিদিন আরো বাড়ছে। এর কারণ মহামারী সহজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দেশটি প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি আদেশ পেয়েছে।

ফেডারেশন অফ মালয়েশিয়ান ম্যানুফ্যাকচারার্স মালয়েশিয়া সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন এবং মালয়েশিয়ার অন্যান্য সংগঠনগুলো বলছে যে মালয়েশিয়ায় জরুরীভাবে উৎপাদন শিল্পে ৬ লাখ কর্মী, নির্মাণের সাড়ে ৫ লাখ কর্মী, পামওয়েল শিল্পী ১ লাখ ২০ হাজার কর্মী, চিপ শিল্পে ১৫ হাজার কর্মী, এবং মেডিক্যাল শিল্পে ১২ হাজার কর্মী প্রয়োজন। শুধু পাম ওয়েল শিল্প মালয়েশিয়ার GDP তে পাঁচ শতাংশ অবদান রাখে। অনুমান করা হচ্ছে শ্রমিকের অভাবে এ বছর ৩ মিলিয়ন টন ফসল নষ্ট হতে পারে এবং এতে ৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ক্ষতি হবে অন্যদিকে যদি শ্রমিক সংকট অব্যাহত থাকে এবছর রাবার গ্লাভস ব্যবসায় মালয়েশিয়ার আয় ৭০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাজার সম্প্রসারণের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে তবে রিক্রুটিং এজেন্সি বাছাই করার সময় কিছু বিতর্ক এবং সমালোচনা রয়ে যায়। উন্মুক্ত ও স্বচ্ছ ব্যবস্থা বজায় রাখতে বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়াকে সফট এজেন্টের একটি তালিকা সরবরাহ করে। কিন্তু মালয়েশিয়া সরকার কর্মী নিয়োগের জন্য ২৫টি এজেন্সি বেছে নিয়েছে। ২০০৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের সব এজেন্সি সহজে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে পারত। কর্মী পাঠানোর সম্ভাবনা সর্বাধিক করার জন্য বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি (BMET) এবং বাংলাদেশ মালয়েশিয়া চেম্বার অফ কমার্স ইন্ডাস্ট্রি (BMCCI) কে সব রেক্রুটমেন্ট এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর সুযোগ দিতে অনুরোধ করেছে। এর কারণ অতীতে একদল রিক্রুটিং এজেন্সি সিন্ডিকেশন একটি বড় সমস্যা ছিল।

বাংলাদেশে এক হাজারেরও বেশি রিক্রটিং এজেন্সি রয়েছে। যদি তাদের কর্মী পাঠানোর বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয় তবে তা সারা দেশে আরো দক্ষ শ্রমিক খুঁজে পেতে সহায়ক হতে পারে। এখন সিন্ডিকেট ভেঙে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর ব্যবস্থা করতে মালেশিয়া বাংলাদেশের সব বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি গুলোকে অনুমতি দিতে পারে। উভয় দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো জোরপূর্বক শ্রম এবং মানব পাচারের বিষয়ে অভিযোগ তুলে থাকে। সব রেকর্ডিং এজেন্সির মাধ্যমে করবি নেওয়া হলে অপরাধ দূর করা সম্ভব হবে।

মালয়েশিয়ার কিছু স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা সেখানে জোরপূর্বক শ্রম ব্যবহারের অভিযোগ করেছে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ট্রাফিক ইন পার্সন রিপোর্ট ২০২২ প্রকাশ করেছে যেখানে বাংলাদেশ ২এ রয়েছে যা সন্তোষজনক। তাছাড়া মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত বিচার এবং দোষী সাব্যস্ত করার মাধ্যমে মানব পাচার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত মালয়েশিয়া মার্কিন মানব পাচার প্রতিবেদনে সর্বনিম্ন স্তরে রয়েছে। যদিও সরকার পাচার সমস্যা মোকাবিলায় কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে যেমন পাচার বিরোধী আইন এবং কর্মসংস্থান আইন সংশোধন ইত্যাদি।

মানব পাচারের মতই মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করা প্রয়োজন। মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে অভিবাসী শ্রমিক নিয়ে অন্য একটি বিষয় অমীমাংসিত রয়ে গেছে। প্রায় দুই লাখ বাংলাদেশী যথাযথ কাগজপত্র ছাড়াই মালয়েশিয়ায় বসবাস চালিয়ে যাচ্ছেন। মালয়েশিয়ায় অন-অনুমোদিত অভিবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় এখনো চলছে। তবে সম্প্রতি মালয়েশিয়া সরকার ঘোষণা করেছে অবৈধ অভিবাসী শ্রমিকদের ওয়ার্ক পারমিট নবায়ন করা হবে যা খুবই প্রশংসনীয়।

দুই দেশের নতুন চুক্তিতে যারা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে কাজ করছে তাদের আইনি সহায়তা প্রদান করার কথা বলা হয়েছে যাতে তারা বৈধ শ্রমিক হতে পারে। আশা করি এ ধরনের উদ্যোগ মালয়েশিয়ার নিজস্ব প্রচলিত কর্মক্ষেত্রে দক্ষ ও পরিচিত কর্মীদের ধরে রাখতে সাহায্য করবে। বৈশ্বিক সংকটের মধ্যে একটি নতুন স্বাভাবিক উদ্যোগ হিসেবে মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশ উভয় যথাক্রমে অভিবাসী শ্রমিকের আমদানি ও রপ্তানি বাড়িয়ে পারস্পরিকভাবে লাভবান হতে পারে। বাংলাদেশ বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট পর্ব অতিক্রম করছে যেখানে মোট জনসংখ্যার 65% কর্মক্ষম।

বর্তমান সরকারের চালু করা ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা ও সেবাগুলো তরুণরা ব্যবহার করছে। যুবকরা বর্তমানে আরো শিক্ষিত ও দক্ষ হয়ে উঠছে, মালয়েশিয়া তাদের উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ করতে সুবিধা নিতে পারে। যেহেতু মালয়েশিয়ার বিদেশি কর্মীর অন্যতম প্রধান উৎস বাংলাদেশ তাই উভয় দেশী অধিবাসী কর্মীদের নিয়োগ ত্বরান্বিত করে তাদের নিজস্ব রপ্তানি উন্নত করতে পারে। পাশাপাশি বিদেশি বৈদেশিক মুদ্রা আইকারীদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিতের সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে পারে

তো বন্ধুরা আশা করা যায় আপনারা মালয়েশিয়া শ্রমিক নিয়োগ 2022 আজকের খবর কি ছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন এবং এছাড়াও আপনারা যদি এই ধরনের নিউজ আরও পেতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে সদা সর্বদা ঝুলে থাকবেন।

বাংলাদেশিরা মালয়েশিয়ায় কোন কোন ধরনের চাকরিতে নিয়োগ হবেন?

সম্প্রতি মালয়েশিয়া সব অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য পাঁচ বছরের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশিদের নির্মাণ, খনি, গার্হস্থ, পরিষেবা, উৎপাদন এবং প্লান্টেশনসহ বিভিন্ন শিল্পে চাকরির জন্য আবেদন করার অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছে।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের কত টাকা বেতন ও কি কি সুবিধা প্রদান করা হবে?

মালয়েশিয়া সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত নতুন মজুরি বিধি অনুযায়ী তারা প্রতি মাসে কমপক্ষে ১৫০০ মালয়েশিয়ান রিংগিত প্রায় ৩৭০০০ টাকা বেতন পাবেন। তারা মালয়েশিয়ার আইন অনুসারে ওভারটাইম বেতন, বিনামূল্যে আবাসন স্বাস্থ্য বীমা এবং কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা বীমা সহ সব অতিরিক্ত সুবিধার জন্য যোগ্য হবে।

আগামী তিন থেকে চার মাসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কত পরিমান শ্রমিক পাঠানো হবে?

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো অনুসারে আগামী চার মাসে 60 থেকে 80 হাজার অধিবাসী শ্রমিককে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া পাঠানো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী তিন বছরে মালয়েশিয়ায় ৫ লাখের বেশি অতিরিক্ত বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগ করা হবে বলে জানা যায় যার ফলে পরবর্তী পাঁচ বছরে মালয়েশিয়া থেকে ৪/৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স বাংলাদেশে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button
Advertisements
Join Our WhatsApp Group!
error: Content is protected !!